বাংলাদেশ ক্রিকেট (বেঙ্গল টাইগার বা টিম টাইগার্স) নামটা বাংলাদেশের মানুষের কাছে খুব আবেগের। এতটা আবেগ এক দিনে তৈরী হয়নি। এক পা, দু পা করে এগিয়ে চলা বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের প্রতি ভালবাসা আর আবেগ টাও জন্মনিয়েছে একটু একটু করেই।
Source- bn.wikipedia.org
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের লোগো
বাংলাদেশ ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সর্বপ্রথম আত্নপ্রকাশ ঘটে ১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আই সি সি ট্রফিতে অংশ গ্রহণ এর মধ্য দিয়ে। এখানে বাংলাদেশে দুটি খেলায় জয় লাভ করে এবং দুটি খেলায় হেরে যায়। এরপর অবশ্য ৭ বছর বাংলাদেশ আর কোন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ গ্রহণ করতে পারেনি। সাত বছর পর ১৯৮৬ সালে ৩১ মার্চ এশিয়া কাপে বাংলাদেশ সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক ও ডি আই ম্যাচ খেলে পাকিস্তানের বিপক্ষে।
বাংলাদেশ সর্বপ্রথম বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলে ১৯৯৯ সালে। তার আগে বাংলাদেশকে ১৯৯৭ সালের আই সিসি ট্রফি জিততে হয়েছিল, এই ট্রফি জেতার মধ্য দিয়ে প্রথম বারের মত বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়।
Source-bn.wikipedia.org
১৯৮৬ সালের এশিয়া কাপে অংশগ্রহণকারী দল
১৯৯৭ আই সি সি ট্রফি
১৯৯৭ আই সি সি ক্রিকেটে টুর্নামেন্ট মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত হয়, এটি ছিল ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব। যেখানে কেনিয়া এবং প্রথমবারের মত বাংলাদেশ ও স্কটল্যান্ড বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। এই ট্রফিতে বাংলাদেশকে শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে হয়েছিল। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে খেলার জন্য বাংলাদেশের এই আই সি সি ট্রফিতে ফাইনালে জয় পাওয়াটা ছিল আবশ্যিক। ফাইনালে সাদা পোশাকে খেলতে নামা সিমিত ওভারের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল কেনিয়া। কেনিয়া প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটের বিনিময়ে সংগ্রহ করে ২৪১ রান। বৃষ্টি বিগ্নিত খেলায়, ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের টার্গেট দাড়ায় ২৫ ওভারে ১৬৬ রান। শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১১ রান তবে শেষে বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১ রান। সে সময় ব্যাটিংয়ে স্টাইকে ছিলেন উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান খালেদ মাসুদ পাইলট ও নন-স্টাইকে ছিলেন হাসিবুল হোসেন শান্ত। পাইলটের সেই এক বলে ১ রানের সুবাদে বাংলাদেশ ১৯৯৭ আই সি সি ট্রফিতে জয় লাভ করে এবং প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়।
Source- cricket97.com
১৯৯৭ সালে আই সি সি ট্রফিতে জয়ের পর
১৯৯৯ বিশ্বকাপ
১৯৯৯ এর ক্রিকেট বিশ্বকাপ, যার মাধ্যমে ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশ নিজেদের কে পরিচয় করিয়ে দেয় । এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশে, পরাশক্তি পাকিস্তান ও স্কটল্যান্ড কে পরাজিত করে। পাকিস্তানকে পরাজিত করার মধ্যমেই ব্যাপকভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের নাম ছড়িয়ে পরে। আই সি সি এর নিয়ম অনুসারে সপ্তম ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশে প্রথমে বারের মত খেলার সুযোগ পায়। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অভিষেক ম্যাচ ছিল ১৭ মে ১৯৯৯ চেমসফোর্ডে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, এ ম্যাচে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্ব খেলতে নামে বাংলাদেশ । এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশে প্রথম জয় পায় ৩য় ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে। ২২ রানের জয় ছিলো এটি। এই আসরেই শক্তিশালী পাকিস্তান ৬২ কে হারিয়ে আই সি সি এর পুর্ন সদস্যপদ লাভের ভিত রচনা করে বাংলাদেশ। এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ মোট ৫ টি ম্যাচ খেলে, সেখানে তারা ২ টি জয় লাভ করে ও ৩ টি খেলায় পরাজিত হয়। এর ভিত্তিতে বাংলাদেশ ২০০০ সালের ২৬ জুন আই সি সি এর পূর্ণ সদস্য পদ লাভ করে।
Source- mzamin.com
১৯৯৯ বিশ্বকাপ খেলা বাংলাদেশে দল
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ অর্জন
বাংলাদেশ টেস্ট খেলার মর্যাদা লাভ করে ২০০০ সালের জুন মাসে। এই বছরের ১০ ই নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাদা পোশাকে খেলতে নামে নাইমুর রহমান দুর্জয়ের দল। এই খেলায় প্রথম ইনিংস টা ভালো ভাবে খেললেও দ্বিতীয় ইনিংস এ খারাপ খেলার কারনে ৯ উইকেটে হারতে হয় বাংলাদেশ দলকে। বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট ক্রিকেটে জয় লাভ করে ২০০৫ সালে ১০ ই জানুয়ারি তে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে খেলতে নামা ম্যাচে। সেই ম্যাচে প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েকে ২২৬ রানে পরাজিত করে প্রথম টেস্ট খেলায় জয়ের স্বাদ গ্রহন করতে পেয়েছিল বাংলাদেশ।
গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৩ সালে মুশফিকুর রহিম ও আশরাফুলের ব্যাটিং কারিশমায় ৬৩৮ রানের রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশের। টেস্টে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে তামিম ইকবাল। তবে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেটে শিকারের কৃতিত্ব সাকিব আল হাসানের।
২০১৬ সালে ইংল্যান্ড কে ১০৮ রানে এবং ২০১৭ সালে অষ্টেলিয়া কে হারানো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন। ইংলিশদের হারানোর ম্যাচের নায়ক ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও অজি বলেন বধের নায়ক ছিলেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
Source- prothomalo.com
ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম
ও ডি আই ক্রিকেটে বাংলাদেশের অর্জন
ও ডি আই ক্রিকেট বা একদিনের খেলা (৫০ ওভারে) এই খেলায় বাংলাদেশের পারফরম্যান্স সবচেয়ে ভালো। ও ডি আই ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবস্থান ৭ নাম্বারে হলেও বিশ্বের সব ক্রিকেট দল অনেক সমিহ করে এই ফরমেটে বাংলাদেশকে। ক্রিকেটের সেরা সব দল ই বাংলাদেশের সাথে খেলতে নাস্তানাবুদ হয়েছে বেশ কিছু বার। শ্রীলঙ্কা, অষ্টেলিয়া এবং ইংল্যান্ড ছাড়া বাকি সব দলের বিরুদ্ধে ওয়ানডে ক্রিকেটে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। বাকি তিন দলের বিরুদ্ধে সিরিজ না জিতলেও দু এক বার করে হারের স্বাদ ঠিক গ্রহন করতে হয়েছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। এছাড়া ২০০৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দ্বিতীয় পর্বে উঠতে সামর্থ্য হয় ও ২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়াটার ফাইনাল খেলেছিল। বিশ্বকাপের সাফল্য বলতে এতো টুকই। তবে এশিয়া কাপে মোট তিন বার ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। যদিও তিন বারই রানার্সআপ হয়েই শেষ করতে হয়েছিল টুর্নামেন্ট।
ওয়ানডে ফরমেটে বাংলাদেশের ৩ জন বলার হ্যাট্রিক করেনে তারা হলেন শাহাদাৎ হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক ও রুবেল হোসেন।
ওয়ানডে ক্রিকেটে সেরা বোলিং ফিগার মাশরাফি বিন মুর্তজার, তিনি ২০০৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ২৬ রানে নেন ৬ উইকেট। এই ফরমেটে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের অধিকারী লিটন দাস। একদিনের খেলায় তার সংগ্রহ ১৭৬ রান। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের। তাদের জুটিতে সেদিন যোগ হয় ২৯২ রান।
Source- Odhikar.news
বাংলাদেশের সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা
টি টুয়েন্টি তে বাংলাদেশ
টি টুয়েন্টি তে বাংলাদেশের অর্জন খুব সীমিত। এই ফরমেটে বাংলাদেশের অবস্থান ১০ তম। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ মোট ৮৫ টি ম্যাচ খেলেছে তার মাঝে ২ টা খেলায় কোন ফলাফল হয় নি। বাকি ৮৩ টি ম্যাচের ভেতর হার ৫৭ টি খেলায়, আর জয় মাত্র ২৬ টি তে। ২০ ওভারের এই খেলায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ২১৫ ও সর্বোনিম্ন রান ৭০। এই ফরমেটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহক তামিম ইকবাল। এছাড়া এই ফরমেটের এক মাত্র সেঞ্চুরির মালিক ও তিনি। টি টুয়েন্টিতে বাংলাদেশের বোলিং এ ভরসার নাম সাকিব আল হাসান। আন্তর্জাতিক টি টুয়েন্টিতে তার উইকেট সংখ্যা ৮৮ টি। সাকিবের পরে বাংলাদেশের আস্থার জায়গা মোস্তাফিজুর রহমান। তার উইকেট সংখ্যা ৪৪ টি।
Source- kalerkantho.com
টি টুয়েন্টির ফেরিওয়ালা সাকিব আল হাসান
0 Comments
Dear,readers your comment is always appreciated .We will try to replay to your comment as soon as possible:
1)Please,do not spam-spam comment will be deleted immediately upon our review.
2)please,do not add any link to the body of your comment as that will not be published.
3)Only English and Bangla comment shall be approved.